ভারত-রাশিয়া তেল ক্রয় বিতর্ক, যুক্তরাষ্ট্রকে মস্কোর কড়া বার্তা

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর এবার ভারত-রাশিয়া অপরিশোধিত তেল ক্রয় বিতর্কে মুখ খুলল মস্কো। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বাস দিয়েছেন, ভারত আর রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনবে না। এই দাবির পরই রাশিয়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রুশ তেল ভারতের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেই সাথে ইঙ্গিতে বুঝিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেনো কোনোভাবেই ভারত-রাশিয়ার সম্পর্কে হস্তক্ষেপ না করে।

 

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে মস্কো থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে চাপ দিয়ে আসছে। পশ্চিমাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে এড়াতে এবং যুদ্ধ চালানোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে রাশিয়া ভারতের কাছে কম দামে তেল বিক্রি করছে। এই ক্রয়কে ট্রাম্প সরাসরি মস্কোর যুদ্ধকে সমর্থন করা হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং ভারতের রপ্তানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন।

ট্রাম্পের দাবির পর ভারতও তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, অস্থির জ্বালানি পরিস্থিতিতে ভারতীয় গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা এবং জ্বালানি সরবরাহের স্থিতিশীলতা বজায় রাখাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, আমাদের জ্বালানি নীতির দুটি লক্ষ্য হল জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা এবং সরবরাহ সুরক্ষিত করা। জ্বালানি শক্তির উৎসের ভিত্তি তৈরি করা এবং তার বিস্তৃতিও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। একইসঙ্গে তারা বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা আরও গভীর করার আগ্রহের কথাও উল্লেখ করেছে।

 

অন্যদিকে, রাশিয়া এই বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি জারি করে বলেছে, আমরা ভারতের সরকারি নীতির বিষয়টি বুঝি… এটি ভারতীয় জনগণ এবং জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থের রূপ। প্রতিফলিত করে, এবং এই লক্ষ্যগুলি রাশিয়া-ভারত সম্পর্কের বিরোধী হবে না। মস্কো জানিয়েছে, তারা ভারত-মার্কিন সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করবে না, কিন্তু একইসঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তেল ও গ্যাস নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য ও ব্যাপক আলোচনার উপর জোর দিয়েছে।

 

স্মরণকালের মধ্যে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বারবারই বলেছেন যে যতদিন অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে, ততদিন ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা চালিয়ে যাবে। জয়শঙ্কর এও উল্লেখ করেছেন যে পশ্চিমারা যখন নিজেরাই রুশ গ্যাস কেনা বন্ধ করেনি, তখন তারা কীভাবে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

 

সবমিলিয়ে, রুশ তেল নিয়ে ভারত, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই ‘দড়ি টানাটানি’ ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই বহাল রয়েছে।   সূত্র: এনডিটিভি

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ঘোড়াঘাটে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে দু’জন নিহত

» কাজলের এআই ভিডিও, বিপাকে নেটিজেনরা

» প্রথমবার কোকোর কবর জিয়ারত করলেন তারেক রহমান

» শুধু লোক বদলে দিলে দেশ বদলাবে না, সিস্টেম বদলাতে হবে : তথ্য উপদেষ্টা

» বিএনপিতে যোগ দিলেন গণ অধিকার পরিষদের রাশেদ খান

» কুমিল্লা-৩ আসনেও আসিফ মাহমুদের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

» ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর অস্ত্র উৎপাদন ব্যাপকভাবে বেড়েছে রাশিয়ার

» বছরের শুরুতে বন্ধ হচ্ছে অতিরিক্ত সিম ব্যবহার

» অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কারও পক্ষে নয় : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

» ঢাকা-১৭ আসনে ভোটার হচ্ছেন তারেক রহমান : ইসি সচিব

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ভারত-রাশিয়া তেল ক্রয় বিতর্ক, যুক্তরাষ্ট্রকে মস্কোর কড়া বার্তা

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর এবার ভারত-রাশিয়া অপরিশোধিত তেল ক্রয় বিতর্কে মুখ খুলল মস্কো। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বাস দিয়েছেন, ভারত আর রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনবে না। এই দাবির পরই রাশিয়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রুশ তেল ভারতের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেই সাথে ইঙ্গিতে বুঝিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেনো কোনোভাবেই ভারত-রাশিয়ার সম্পর্কে হস্তক্ষেপ না করে।

 

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে মস্কো থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে চাপ দিয়ে আসছে। পশ্চিমাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে এড়াতে এবং যুদ্ধ চালানোর জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে রাশিয়া ভারতের কাছে কম দামে তেল বিক্রি করছে। এই ক্রয়কে ট্রাম্প সরাসরি মস্কোর যুদ্ধকে সমর্থন করা হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং ভারতের রপ্তানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন।

ট্রাম্পের দাবির পর ভারতও তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, অস্থির জ্বালানি পরিস্থিতিতে ভারতীয় গ্রাহকদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা এবং জ্বালানি সরবরাহের স্থিতিশীলতা বজায় রাখাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, আমাদের জ্বালানি নীতির দুটি লক্ষ্য হল জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা এবং সরবরাহ সুরক্ষিত করা। জ্বালানি শক্তির উৎসের ভিত্তি তৈরি করা এবং তার বিস্তৃতিও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। একইসঙ্গে তারা বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে জ্বালানি সহযোগিতা আরও গভীর করার আগ্রহের কথাও উল্লেখ করেছে।

 

অন্যদিকে, রাশিয়া এই বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি জারি করে বলেছে, আমরা ভারতের সরকারি নীতির বিষয়টি বুঝি… এটি ভারতীয় জনগণ এবং জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থের রূপ। প্রতিফলিত করে, এবং এই লক্ষ্যগুলি রাশিয়া-ভারত সম্পর্কের বিরোধী হবে না। মস্কো জানিয়েছে, তারা ভারত-মার্কিন সম্পর্কে হস্তক্ষেপ করবে না, কিন্তু একইসঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তেল ও গ্যাস নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য ও ব্যাপক আলোচনার উপর জোর দিয়েছে।

 

স্মরণকালের মধ্যে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ বারবারই বলেছেন যে যতদিন অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হবে, ততদিন ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা চালিয়ে যাবে। জয়শঙ্কর এও উল্লেখ করেছেন যে পশ্চিমারা যখন নিজেরাই রুশ গ্যাস কেনা বন্ধ করেনি, তখন তারা কীভাবে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

 

সবমিলিয়ে, রুশ তেল নিয়ে ভারত, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই ‘দড়ি টানাটানি’ ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই বহাল রয়েছে।   সূত্র: এনডিটিভি

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com